দুধ বারবার জ্বাল দিয়ে খাওয়া কি ভালো

দুধকে আদর্শ খাবার বলা হয়। কারণ খাদ্যের ছয়টি পুষ্টি উপাদান কার্বোহাইড্রেট (শর্করা), প্রোটিন (আমিষ), ফ্যাট (স্নেহ), মিনারেল (খনিজ উপাদান), ভিটামিন ও পানি-সবই দুধে থাকে। বাড়িতে দুধ এলে প্রথমেই আমরা ফুটিয়ে ঠান্ডা করে ফ্রিজে রাখি। সেটা কাঁচা দুধ হোক বা প্যাকেটের।

কাঁচা দুধে নানা রকম ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া থাকে। ফুটিয়ে নিলে সেগুলো মরে যায় এবং হজমের গোলমাল কম হয়। ফোটানো দুধ একটু বেশি দিন ভাল থাকে। ফ্রিজে রেখে আপনি অনায়াশে তিন থেকে চার দিন চালিয়ে নিতে পারবেন।

সাধারণত প্যাকেটের দুধ পাস্তুরিত করাই থাকে। বা সহজ ভাষায় বললে, যতটা ফুটালে ব্যাকটেরিয়া মরে যায়, ততটা তাপমাত্রা পর্যন্ত ফোটানোই হয়। তারপরেই বিক্রি করা হয়। বিশেষ করে টেট্রা প্যাকে যে দুধ বিক্রি হয়, সেগুলো ফোটানোর কোনও প্রয়োজন নেই। সিল না খোলা পর্যন্ত আপনি বাইরেই রাখতে পারবেন। খারাপ হওয়ার ভয়ও নেই।

বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী এক দুধ ২-৩ বারের বেশি ফোটানো উচিত নয়। তার মধ্যেই শেষ করে ফেলা ভাল। দুধ ফোটানো সহজ মনে হলেও কাজটা ততটা সহজ নয়। খুব বেশি আঁচে দুধ ফুটালে নিচটা ধরে যাবে। তাই মাঝারি আঁচে ধীরে ধীরে দুধ ফোটাতে হবে। এবং পাত্রের পাশে ছোট ছোট বুদবুদ দেখলেই নাড়তে হবে। দুধ ফুটে ওঠা পর্যন্ত নেড়ে যেতে হবে।

ফুটে গেলে উপরে যে সর পড়বে সেটা তুলে ফেলতে পারেন। খেলেও কোনও সমস্যা নেই। তবে যাদের দুধ খেলে হজমের সমস্যা হয়, তাদের এই সর খেলে সেই সমস্যা বাড়তে পারে। তাই সর তুলে রূপচর্চায় ব্যবহার করতে পারেন। দারুণ কাজ দেবে। খুব বেশি আঁচে দুধ ফুটালে দুধের পানি শুকিয়ে প্রোটিন গাঢ় হয়ে যায় বেশি। তাতে দুধের স্বাদ এবং রং বদলে যেতে পারে।

বেশিক্ষণ বারেবারে ফুটানো ক্ষতিকর। এতে প্রায় সকল ভিটামিন ও অন্যান্য উপকারী উপাদান নষ্ট হয়ে যায়। একবার ফুটালে আর দ্বিতীয়বার ফুটানোর দরকার নেই। বারবার ফুটানো দুধের গুণাগুণ নষ্ট করে দেয়। ফুটানো দুধ ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে পারেন এবং ঠান্ডা অবস্থায় খেতে পারেন। আর কাঁচা দুধ একবারেই খাবেন না। এটি নিরাপদ নয়।

ফুটানো দুধ অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণ, রক্তের শর্করা ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক। পাশাপাশি, দুধ ফুটালে দুধের ল্যাকটোজ নামের যে সুগার থাকে, তা ভেঙে গিয়ে ল্যাকটুলোজ ও বিভিন্ন এসিডে রূপান্তরিত হয়। ফলে যাদের ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স আছে তাদের জন্য ফুটানো দুধ সহনীয় হতে পারে। পাশাপাশি ফুটানো দুধে কিছু প্রোটিনও ধ্বংস হয়ে।